কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের বেহাল দশা, জনদূর্ভোগ চরমে রাস্তা নয় এ যেন মরণ ফাঁদ

January 23, 2018,

আশরাফ আলী॥ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মৌলভীবাজার থেকে বড়লেখা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার জুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তে সড়কের বেহাল দশা। সমস্ত রাস্তা জুড়ে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। যেগুলো চলাচল করছে সে গাড়ীগুলো রাস্তা ভালো না থাকার কারণে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে গাড়ি মালিকদের গুনতে হচ্ছে লোকসান।

সরেজমিন গেলে দেখা যায়, জেলার কুলাউড়া সড়কের ব্রাহ্মনবাজার, খুমিয়া, চুনঘর, চাঁতলগাও, উছলাপাড়া পৌর শহরের রেলগেইট, বিছরাকান্দি, জুড়ী উপজেলার ভুয়াই, মানিকসিংহ, গোবিন্দপুর, ভোগতেরা, আমেরতল, জুড়ী শহরের চৌমূহনা পয়েন্ট, উপজেলা গেইট, জাঙ্গিরাই, বাছিরপুর, বড়লেখা উপজেলার কুয়াইয়াছড়ি, হাতলিঘাট, সফরপুর, ওয়াবদা, দক্ষিণভাগ বাজারের উত্তর অংশ, কাঁঠালতলী, উপজেলা, থানা এলাকা, পাখিয়ালা, ডাকবাংলা, মধ্যবাজার, লাইটেস স্ট্যান্ড এলাকার অবস্থা বেশী খারাপ। জেলা থেকে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় যাতায়াতের একমাত্র প্রধান সড়কটি বড় বড় গর্তের কারণে চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে জুড়ী উপজেলার চৌমূহনা ও বাছিরপুর এলাকার সড়কের অবস্থা একেবারেই খারাপ। সমস্ত সড়ক ভেঙে তৈরী হয়েছে বিরাট গর্তের। অনেক ঝুকি নিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায় এসড়ক দিয়ে। এলাকার লোকজন জানান, সড়ক ভালো না থাকার কারণে এখানে অনেক দূর্ঘটনা ঘটে। অনেক সময় বড় গর্তের মধ্যে গাড়ি বিকল হয়ে যায়।

সড়কে ছোট-বড় গর্তের কারণে ঝুকি নিয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করছে। গর্তের মধ্যে পড়ে গাড়ী সড়কে বিকল হয়ে পড়ার কারণে সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্খিত যানযট। যার ফলে জনদূর্ভোগে পড়তে হয় আইনজীবি, পেশাজীবি, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক পিংকু বলেন, ‘ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক কষ্ট হয়। রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে মন চায় না। তার পরেও কষ্ট করে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় গাড়ীর যাত্রী বিরক্ত হয়।

সিএনজিচালিত আরেক অটোরিকশা চালক এনামুল হক বলেন, আমি প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে গ্যাসের জন্য কুলাউড়ায় যাই। আগে জুড়ী থেকে কুলাউড়া আসতে সময় লাগত ২০ মিনিট। এখন সেখানে লাগে ১ ঘণ্টা। ভাঙা রাস্তা হওয়ায় গাড়ির অবস্থা একবোরেই খারাপ হয়ে যায়। ভাঙা রাস্তা দিয়ে গাড়ী চালাতে হয়। ফলে প্রতিদিন গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়।

একই কথা বলেন নাজিম উদ্দিন, ইসলাম, রিয়াজ, মশাহিদ, সিরাজসহ অনেক সিএজিচালিত অটোরিকশা চালক।

এডভোকেট শাখাওয়াত হোসাইন বলেন, এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত আমি যেতে হয়। কুলাউড়া থেকে জুড়ী পর্যন্ত রাস্তা ভেঙে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দিন ধরে রাস্তাটি মেরামত না হওয়ায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার গর্তগুলো একেকটি মরণ ফাঁদ। ফলে ভয় ও সীমাহীন কষ্ট নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

অনেক যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ কি সড়কের এমন বেহাল দশা দেখছেনা? দীর্ঘদিন ধরে সড়কে তৈরী হয়েছে ছোট বড় গর্তের।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী

প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ইতিমধ্যে জুড়ীর বাছিরপুর, ভোগতেরা হাতলিয়া সহ কিছু জায়গায় রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। আশাকরি কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে। বাকী যে রাস্তা টুকু রয়েছে তা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার হয়ে গেলে কাজ শুরু করা যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com