ভাষা শহিদদের স্মরণে মৌলভীবাজারে শিক্ষার্থীরা গড়লো ‘মানব শহীদ মিনার’
হোসাইন আহমদ॥ “সালাম সালাম হাজার সালাম, সকল শহিদ স্মরণে। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি”। ভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছর পরেও অকুতোভয় ভাষা সৈনিক সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউলদের স্মরণ করতে এবং তাদরে আত্মত্যাগের প্রতিদান হিসেবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সাদ্য অনুযায়ী এই ২১শে ফেব্রুয়ারীতে শহিদদের স্মরণ করে আসছে।
কেউবা কলাগাছ, বাঁশ, ইট, মাটি ও কাপড় দিয়ে অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করে সেই মৃত্যুঞ্জয়ী ভাষা সৈনিকের স্মরণ করে আসছেন। ব্যতিক্রমী হিসেবে এবার “মানব রচিত শহিদ মিনার” তৈরি করে ইতিহাস গড় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ওয়াহিদ সিদ্দেক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় স্কুলের ৩২০ জন শিক্ষার্থী ৫২’র ভাষা আন্দোলনে জীবন দানকারী শহিদদের স্মরণে ওই মানব রচিত শহিদ মিনার তৈরি করে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মধ্যে ইতিহাস গড়েছে।
ফাগুনের দুপুরে প্রচন্ড রোদের তাপকে উপেক্ষা করে ১৫ মিনিট প্রদর্শন করা হয় এটি। এসময় স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকার হাজার হাজার দর্শক প্রদর্শনী উপভোগ করেন। শিক্ষার্থীদের দাবি এটাই বৃহত্তর সিলেট বিভাগের প্রথম ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় মানব রচিত শহিদ মিনার।
ওয়াহিদ সিদ্দেক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাহেরা আক্তার, সিপা আক্তার, ইলমা আক্তার, নয়ন গোপ, আবজাল হোসেন, সাদিয়া জাহান মিম, রাইসা আক্তার, বুশরা আক্তার, পূর্ণিমা আক্তার, মুস্তাফিজুর রহমান, মুন্না, মুহিবুল আবুল হাসানাত জামিল, সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ খালেদ মাহমুদ ফারহান জাহান হামিম, ইমা আক্তার মিম, আফরুজা আক্তার, ফাহমিদা আক্তার ইপা’র সাথে কথা হলে তারা বলেন,
“সহপাঠিরা উদ্যোগ নিয়ে দীর্ঘ ১২দিন নিয়মিত অনুশীন করে জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদরে স্মরণ করতে এই ব্যতিক্রমী মানব রচিত শহিদ মিনার তৈরি করেছি”।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম চেীধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের আগ্রহে ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজানাতে এ আয়োজন করতে পেরে আমি অত্যান্ত আনন্তি। এটার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো এখনও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম ও শহিদদের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে”।
স্কুল পরিচালনা কমিটির শিক্ষানবিস সদস্য আমিরুল ইসলাম সাহেদ বলেন, গত বছরও এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভাষা দিবসে মানব রচিত ২১ একে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করছে তারা আগামীতে দেশের কল্যাণে কাজ করতে নিজেদেরকে উৎসর্গ করবে।
মন্তব্য করুন